কচু শাকের উপকারিতা ও অপকারিতা
বাংলাদেশে গ্রামীণ হোক বা শহরের পরিবেশ কচু শাক একটি অত্যন্ত পরিচিত সবজি
।কচুর শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, এ, সি, আয়রন ,ক্যালসিয়াম , এবং
পটাশিয়াম । যা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ রক্তশূন্যতা পূরণ হৃদরোগের
,স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । তবে
অতিরিক্ত খেলে গ্যাস্টিক বা এলার্জির সমস্যা হতে পারে । এবং এদের থাকা অক্সলেট
উপাদান কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে । তাই যাদের কিডনি সমস্যা আছে তাদের
কচুশাকে এড়িয়ে চলা উচিত । অনেকের প্রিয় খাবারের তালিকায় এটি রয়েছে
।আবার কেউ কেউ কচু শাক খেতে একটু দ্বিদায় থাকেন তবে প্রশ্ন হচ্ছে এই শাকে আসলে কি
উপকার আছে ? কিংবা এর কোন ও অপকারিতা রয়েছে কি না ?
পেজের সূচিপত্র ঃ
- কচু শাকের পুষ্টিগুণ ও উপাদানের পরিমাণ
- কচু শাকের উপকারিতা
- কচু শাকের অপকারিতা
- সাবধানতা
- শেষ কথা
- আমাদের পরামর্শ
কচু শাকের পুষ্টিগুণ ও উপাদানের পরিমাণ
- উপাদান পরিমান (প্রতি১০০গ্রামে)
- ক্যাররি প্রায় ৪৫ কিালোক্যালরি
- ফাইবার ৩.৭ গ্রাম
- আয়রন ১.৮ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন A উল্লেখযোগ্য পরিমাণে
- ভিটামিন C ১০-১২ মিলিগ্রাম অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে
কচু শাকের উপকারিতা
আয়রন ও হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সহায়তা : শাকে রয়েছে উচ্চ মাত্রার আয়রন , যা রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে । বিশেষ করে যে সব নারী ও শিশু রক্ত শূন্যতায় ভুগছেন তাদের জন্য এটি একটি প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে ।
পাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা :ফাইবার থাকার কারণে এটি হজম শক্তি বাড়ায় ।এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে ।
দৃষ্টি শক্তি বাড়ায় : ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন থাকার ফলে চোখে দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে ।
অ্যান্ট অক্সিডেন্টের জন্য ভালো উৎস : কচু শাকে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের টক্সিন দূর করে এবং বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে পারে । চুলের জন্য স্বাস্থ্য উন্নত করে ভিটামিন এ ও সি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় । এবং চুলের গোড়া মজবুত রাখতেন সাহায্য করে ।
ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে: ভিটামিন A ও C ত্বকের উজ্জলতা বাড়ায় এবং চুলের গোড়া মজবুত রাখতে সাহায্য করে ।
ওজন নিয়ন্ত্রণ : কম ক্যালোরি ও বেশি ফাইবার থাকার কারণে কচুর শাক
খেলে পেট ভরা লাগে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে ।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি : এতে থাকা ও মেগা- 3 ফ্যাটি এসিড এবং
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ : কিছু গবেষণায় দেখা গেছে কচু শাক উচ্চ
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারেন ।
হাড় ও দাঁত নজবুত করে :ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস হাড় ও দাঁতে শক্তিশালী করে এবং হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে ।
কচু শাকের অপকারিতা
অ্যালার্জি ও গ্যাসট্রিক: কিছু মানুষের পোশাকে এলার্জি হতে পারে যা সমস্যা তৈরি করে । অতিরিক্ত পরিমাণ খেলে গ্যাসটিক বা পেটফাঁপার সমস্যা হতে পারে ।
অক্সালেট: কচুতে অক্সালেট নামক উপাদান থাকে, যা কিডনিতে পাথর সৃষ্টি করতে পারে । তাই যাদের কিডনি জনিত সমস্যা আছে তাদের কচু শাক খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত ।
অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট: কচুর ডাঁটা ও মুখেতে প্রচুর পরিমাণে
কার্বোহাইড্রেট শর্করা থাকে তাই যারা ওজন কমাতে চাইছেন তাদের কচুর ডাঁটা বা মুখি
পরিমিত পরিমান খাওয়া উচিত ।
চুলকানির সমস্যা : অনেকের ক্ষেত্রে গলা বা মুখ চুলকানির অনুভব হতে পারে এটি মূলত কচুতে থাকা ক্যালসিয়াম অক্সালেট নামক উপাদানের কারণে হয়ে থাকে ।
হজমের সমস্যা : কচু শাকে থাকা কিছু কঠিন ফাইবার হজমে সমস্যা করতে পারে বিশেষ করে যদি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া হয় ।
আরও পড়ুনঃ গর্ভাবস্থায় কচু শাকের উপকারিতা
কচুশাকে বিদ্যামান নানা রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান । গর্ভবতী মা ও
শিশুর জন্য অনেক উপকারী । কচু শাক সহজলভ্য তাই দরিদ্র পরিবারের গর্ভবতী
মহিলারা ভিটামিন ও আয়রনের চাহিদা পূরণের জন্য কচুর শাক বা কচু খেতে পারেন ।
জ্বর কমাতে : জ্বরের সময় রোগীকে দুধ কচু রান্না করে খাওয়ালে জ্বর দ্রুত ভালো হয় ।
আমাদের শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ সচল রাখতে কচু শাক বেশি কার্যকর ভূমিকা পালন করে ।এই শাকের আইরন ও ফলেট রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি করে । এর ফলে অক্সিজেন সংবহন পর্যাপ্ত থাকে এতে উপস্থিত ভিটামিন রোগীে কে রক্তপাতের সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে । তাছাড়া কচু শাক আয়রন সমৃদ্ধ বলে এর সমাদর অনেক বেশি আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমে গেলে সব ডাক্তাররাই কচু শাক খাওয়ার পরামর্শ দেন
কচু শাক যে কোন ধরনের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে । কেননা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপদান রয়েছে এতে । পুষ্টিবিদদের মতে একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের ক্যালসিয়াম ও লৌহের চাহিদা কচু শাক সহজেই মেটাতে পারে ।
সাবধানতা
তবে যাদের শরীরে এলার্জির সমস্যা আছে তাদের কচু শাক না খাওয়াই ভালো । কচু শাক
খাওয়ার পর কিছুটা বুক জ্বালাপোড়া করতে পারে তাই । যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে
তাদের সতর্ক থাকতে হবে খাওয়ার পর অ্যাসিডিটির ওষুধ খেয়ে নিলে হবে । কচুর
শাক রান্না করার আগে কিছু পরিমাণ লেবুর রস, ভিনেগার ,অথবা তেতুল গোলা পানি
দিলে অপালেটের দানা দূর করা যায় আর এই অপালেটের দানা দূর হওয়ার কারণে কচুর শাক
খেলে ও গলা চুলকাবে না ।
শেষ কথা
কচুর শাক নিঃসন্দেহে একটি পুষ্টিকর এবং উপকারী শাকসবজি । তবে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যা সঠিকভাবে রান্নাও গ্রহণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় ।আমাদের খাদ্য তালিকায় এমন প্রাকৃতিক উপাদানগুলো থাকলে শরীর যেমন ভালো থাকে তেমন দীর্ঘ মেয়াদে নানা রোগ থেকেও মুক্ত থাকা যায় ।
আমাদের পরামর্শ
আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে নিশ্চয় আপনি জেনে গেছেন কচু শাক খেলে কি উপকার মিলেবে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে । কচুর শাক খেলে কি উপকার শরীরের । তবে কচুর শাক খাওয়ার ক্ষেত্রে এলার্জি সমস্যা হতে পারে এ ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। কোথাও বুঝতে যদি সমস্যা হয় তাহলে আপনি ব্যক্তিগতভাবে আমাকে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
আমাদের আজকের ব্লগটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অনুগ্রহ করে এটি আপনার সোশ্যাল
মিডিয়ায় প্লাটফর্ম গুলোতে শেয়ার করুন । আপনার বন্ধুদের ও জানার সুযোগ করে দিন
। এছাড়াও আপনি পরবর্তীতে কোন বিষয়ে ব্লগ পড়তে চান তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে
পারেন । আপনাদের মতামত আমাদের পরবর্তী কনটেন্ট তৈরি করতেও লিখতে অনুপ্রেরণা
যোগাবে ।
সফটনোরি আইটি নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url